বইয়ের নাম-অমানুষ।
লেখক-হুমায়ূন আহমেদ
সাইজ:- 4 এমবি
রেজুলেসন: HD 700 dpi

বইটির রিভিউ দেখুনঃ-

ইতালির নামকরা সিল্ক ব্যবসায়ি ভিকির বিজনেস খুবই মন্দ যাচ্ছে।কলকারখানা গুলোকে আগের অবস্থায় আনতে প্রচুর ক্যাপিটাল দরকার।ব্যাংক গুলোও ঋণ দিতে চাচ্ছেনা।
এদিকে শহরে কিডন্যাপিং বেড়েই যাচ্ছে।তবে ভিকি এমন কেও নয় যার জন্য তার একমাত্র সন্তান অ্যানি কে কেও কিডন্যাপ করবে।তবুও সৌখিন,আদুরে,সুন্দরী বউ রিন এর কথায় সম্পূর্ণ অনিচ্ছাতে সে এতরার সহযোগিতায় একজন বডিগার্ড রাখে।বডিগার্ড এর নাম জামশেড। সে বাংলাদেশী।
এতরা নামের এক লোভী,লম্পট,চরিত
্রহীন পুরুষের এবাসায় খুব ভাল যাতায়াত।রিন এর সাথে বেশ ভাল সম্পর্ক,তারা বেশ খোলামেলাও।সুযোগ মিললে দুজন যৌন সুখ টা মিটিয়ে নেয়।সুসময়-দুসঃসময় এ এতরা তাদের সবচেয়ে কাছের একজন।
‘অভাবে স্বভাব নষ্ট;-একটা কথা আছে।দুষ্টু বুদ্ধির এতরার পরামর্শে ভিকি সামান্য হাফ মিলিয়ন ইউ এস ডলার পাবার আসায় নিজের একমাত্র মেয়ে অ্যানিকে দিয়ে এমন জঘন্য কিডন্যাপের নাটক করাতে রাজি হয়।কারন,অ্যানি কিডন্যাপ হলে ইনস্যুরেন্স কোম্পানি কিডন্যাপারদের দাবী অনুযায়ী তাদের টাকা দিতে বাধ্য থাকবে। অবশ্য নাটকটির মূল পরিকল্পনারি ছিল মাফিয়া কিং ভিকানডিয়া।এতরা এতে খল নায়ক মাত্র।কথা ছিল নাটক শেষে হাফ মিলিয়ন ডলার আর মেয়ে অ্যানিকে ফেরত পাবে ভিকি।নাটক চলল পরদিন সকালে।জামশেদ প্রাণ-পণ চেষ্টা করে অ্যানিকে আগলে রাখতে পারেনি ঠিক তবে কিডন্যাপারদের তিনজন কে অব্যর্থ নিশানায় ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছিল।গুরুতর জখম হয়ে নিজেও মৃতপ্রায় হয়ে হসপিটাল এ ছিল।
কিডন্যাপিং নাটকের শেষ দৃশ্য পাল্টে গেলো।ছোট্ট বার-বছরের ফুলের মত কোমল দেবশিশু অ্যানিকে হত্যা করা হয় নিষ্ঠুর,অমানুষিক আর পাষণ্ডভাবে।চারজন মানুষরূপী জানোয়ার তাকে দিনের পর দিন রেপ করে মেরে ফেলে,এদের মাঝে এতরাই প্রথম তাকে ধর্ষণ করে।
এতটুকুন ফুলের মত কোমল শিশুটির বুজতে বাকি ছিলোনা পৃথিবীর বাস্তবতা কতটা নির্দয়,নিষ্ঠুর আর কঠিন হতে পারে।তবে হ্যাঁ মৃত্যুর আগে স্নেহ,মায়া-মমতা আর ভালোবাসার একটাই আশ্রয়স্থল চিনতেও সে ভুল করেনি।বিশাল বাড়ি-গাড়ি আর নিঃসঙ্গতার মাঝে ছোট্ট এই শিশু টির ভালোবাসার মানুষটি ছিল জামশেদ(বাংলাদেশ
ী)।একেবারেই স্বল্পভাষী,ভাবগ
ম্ভীর,ভুরু-কোঁচকানো,হাঁসিবিহীন
,কাঠখোট্টা,শক্ত চেহারার এই মানুষটির বিশাল মনটা চিনতে ভুল করেনি ছোট্ট সোনা অ্যানি।অ্যানি ঠিক ই চিনেছিল আদর করার সুরে আম্মু-আম্মু বলে গায়ে,স্তনে আর প্যানটি তে হাত রাখা এতরা কে। আর অন্যদিকে বাহির টা নারকেলের মত কিন্তু ভেতরের টা মিষ্টি পানির মত অদ্ভুত একটা বিশাল হৃদয়ের মানুষ জামশেদ কে।
হ্যাঁ,জামশেদ অ্যানি র ভালোবাসার মূল্য দিয়েছিল,দিয়েছিল খুব ভালভাবেই।তাইতো মুমূর্ষু অবস্থা থেকে হাসপাতাল ছাড়ার পর সুকৌশলে,ঠাণ্ডা মাথায় একের পর এক বাকি সব কিডন্যাপআরদের হত্যা করে।এতে বাদ যায়নি ,মাফিয়া কিং ভিকানডিয়াও।
ছোট্ট পুতুলের মত অ্যানি হয়তো কখনো ভাবতেও পারিনি তার জন্য এতোটা গভীর ভালোবাসা ছিল কাঠখোট্টা,গম্ভীর এই শক্ত মানুষটির পাথরসম হৃদয়এ। এই ৫০/৫৫ বছরের নিঃসঙ্গ,সাহসী,পাথরের ন্যায় কঠিন হৃদয়ের বাংলাদেশী জামশেদ সত্যি সত্তিই কঠিন হৃদয়ের বেড়াজাল ছিন্ন করে ভালবেসে ফেলেছিল ছোট্ট দেবশিশু অ্যানিকে।তাইতো মৃত্যুর আগে জামশেদের শেষ ইচ্ছা ছিল এতটুকুই-
‘’যদি সম্ভব হয় অ্যানির সিমেটরির(কবরের)পাশে একটু জায়গা করে রেখো,ক্যানটারেলা।মেয়েটি বড্ড ভীতু।আমি পাহারায় থাকলে হয়তো শান্তিতে ঘুমুতে পারবে!"
ইতালির Eastran cemetryতে অ্যানি নামের মেয়ের কবরের পাশে একজন বিদেশীর কবর আছে।কবরের গায়ে চার লাইনের একটা ইটালিয়ান কবিতা।যার অর্থ অনেকটা এরকম-
‘এখানে একজন ঘুমিয়ে আছে।তাকে শান্তিতে ঘুমুতে দাও।'
🔯অমানুষ হুমায়ুন আহমেদ বইটি ডাউনলোড করুন‌‌🔯

0 comments:

Post a Comment

 
Top